sumon info
 
  ABOUT ME
  Product Order
  Info
  TUTARIAL
  Softwear
  Page-1
  PAGE -3
  Page -4
  Page-5
  Haking
  Photogariphi
  Games
  Mobile
  ANDROID
  Most Needed
  madidation
  FREELANCING
  ENTERTEINMENT
  Chain Tune
  Home
madidation
মেডিটেশনঃ শৃঙ্খল মুক্তির বিজ্ঞান। (সম্ভবত মেগা টিউন) আমার প্রথম টিউনে সবাইকে স্বাগতম! এই টিউন টি প্রিয টিউনার হাসান যোবায়ের (আল-ফাতাহ) কে উৎসর্গ করছি। পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ অসীম শক্তি ও সম্ভাবনা নিয়ে জন্মায়। কিন্তু মানুষের এই অসীম শক্তি ও সম্ভাবনাকে সব সময় শৃঙ্খলিত ও পঙ্গু করে রাখে সংস্কার ও ভ্রান্ত বিশ্বাস। তাই অসীম শক্তি ও সম্ভাবনা নিয়ে জন্মানো স্বত্ত্বে ও পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পরিমন্ডলে প্রচলিত ধারণার শৃঙ্খলে সে ক্রমান্বয়ে বন্দি হয়ে পড়ে। পরিবেশ যা তাকে ভাবতে শেখায় সে তা-ই ভাবে, যা করতে বলে তা-ই করে। যে হতে পারত যুগস্রষ্টা বিজ্ঞানী, হতে পারত শতাব্দীর অভিযাত্রী, অমর কথাশিল্পী, হতে পারত মহান নেতা বা বিপ্লবী, হতে পারত আত্নজয়ী বীর বা ধর্মবেত্তা... সেই মানব শিশুই ভ্রান্ত ধারণার বন্দী হয়ে পরিণত হচ্ছে কর্মবিমুখ, হতাশ, ব্যর্থ কাপুরুষে। এ ব্যর্থতার কারণ মেধা বা সামর্থ্যের অভাব নয়, এ ব্যর্থতার কারণ বস্তুগত শৃঙ্খল নয়, এ ব্যর্থতার কারণ মনোজাগতিক শিকল। ছোট্ট একটি উদাহরণ দিলেই আশা করি ব্যাপারটি পরিস্কার হবে। হস্তিশিশু আদরিণী। মায়ের সাথে বন-বাদাড় ভেঙ্গে চষে বেড়ায় মুক্তির আনন্দে। এ আনন্দে ছেদ পড়লো একদিন। শিকারীদের হাতে ধরা পড়ল সে। পায়ে শক্ত শিকল পরিয়ে বিক্রি করে দেওয়া হল সার্কাস পার্টির কাছে। সার্কাসের পশুপালক তাকে ছ’ফুট লম্বা লোহার শিকল পরিয়ে বেধে রাখলো বিরাট এক থামের সাথে। বনের মুক্ত প্রাণী আদরিণী বন্দি হয়ে গেল ছ’ফুট ব্যাসার্ধের বৃত্তের মাঝে। বারবার জোরে টান মেরে শিকল ছেড়ার ব্যর্থ চেষ্টা করতে থাকে সে। চেষ্টায় লাভ হয় না কিছুই উপরন্তু পা রক্তাক্ত হয়ে ওঠে কিন্তু শিকল আর ছেড়ে না এবং মুক্তি ও মেলে না। তারপর আস্তে আস্তে তার দৃড় বিশ্বাস জন্মালো-এ শিকল তার দ্বারা ছেড়া সম্ভব নয়, শুধু সে ব্যর্থ হবে এবং পা রক্তাক্ত হবে। এভাবে আদরিণী বড় হতে লাগলো এবং শিকল সে আর ভাঙতে পারলো না। আস্তে আস্তে তার মন থেকে মুক্তির শেষ আকাঙ্ক্ষা টুকু ও বিলীন হয়ে গেল। তার পৃথিবী সীমিত হয়ে গেল ছ’ফুট শিকলের বৃত্তের মাঝে এবং এতেই সে অভ্যস্ত হয়ে উঠল। এখন আর তাকে বাধার জন্য মোটা ও শক্ত থাম প্রয়োজন হয় না, ছাগল বাধার ছোট খুটি হলেই চলে। পরিণত বয়সে বিশাল দেহ বিপুল শক্তির অধিকারী হওয়া স্বত্ত্বে ও আদরিণী তার দীর্ঘদিন ধরে গড়ে ওঠা ভুল ধারণার সিমানায় আবদ্ধ থাকল। এক ঝটকায় খুটি থেকে নিজেকে মুক্ত করার পর্যাপ্ত শারীরিক শক্তি থাকা স্বত্ত্বে ও তার মনে বদ্ধমূল ধারণা জন্মেছে যে এই ছ’ফুট ব্যসার্ধের বৃত্তই তার পৃথিবী। এটাই তার নিয়তী। যখনই তার পায়ে একটু টান লাগে তখনই সে ধরে নেয় এর বাইরে যাওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়। সার্কাস দলের সাথে সে নানা জায়গায় ঘোরে, শেখানো খেলা দেখায়। একটি ছোট খুটিতেই এখন তাকে বেধে রাখা হয়। সার্কাসের তাবুতে আগুন লাগল একদিন। সার্কাসের লোকজন যে যার মত জীবন নিয়ে পালাল। আগুন নেভানোর পর দেখা গেল অনেক কিছুর সাথে আদরিণী ও পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পায়ের সেই শিকল রয়েছে, খুটি পুড়ে গেছে। পর্যাপ্ত শারীরিক শক্তি থাকা স্বত্ত্বে ও ভ্রান্ত বিশ্বাসের বন্দি আদরিণী মুক্ত হবার কোন চেষ্টাই করে নি কারন ভ্রান্ত বিশ্বাস তাকে সেখানেই দাড় করিয়ে রেখেছে। আদরিণীর এই কাহিনী উপমা দেবার জন্য কোন বানানো গল্প নয়। যারা সার্কাসের দল দেখেছেন, একটু খোজ নিলেই জানতে পারবেন সার্কাসের বিশালকায় হাতিগুলোকে এভাবেই নিয়ন্ত্রন করা হয়। সার্কাসের বহু হাতি এভাবেই মারা গেছে অগ্নিকান্ডে। হতভাগিনী এই হাতির মতই ভ্রান্ত বিশ্বাসের বন্দি নর-নারীর সংখ্যা ও আমাদের সমাজে কম নয়। কত ধরণের ভ্রান্ত বিশ্বাস যে আমাদের মাঝে আছে তা বলে শেষ করা যাবে না। যেমনঃ আমার পোড়া কপাল..., এত বড় দ্বায়িত্ব পালনের যোগ্য আমি নই..., তার সাথে প্রতিযোগীতায় আমি পারবোনা..., জীবন টা আমার দুঃখে দুঃখেই যাবে..., বড় কিছু করা আমার কপালে নেই..., আমার কপালে সুখ সয় না...,আমার এই অসুখ ভাল হবে না... এরকম হাজারো নেতিবাচক ও ভ্রান্ত বিশ্বাসের শিকলে আমরা বন্দী জীবন যাপন করছি। এই শিকল লোহার নয়, এই শিকল মনের। আমরা কেউ ই এই শিকল ভাঙ্গার চেষ্টা করছিনা। কিন্তু একবার এই ভ্রান্ত ধারণা আমরা ঝেড়ে ফেলে দিলেই দেখতে পাব আমরা প্রত্যকেই এক বিপুল শক্তির আধার। এই ভ্রান্ত ধারণার শিকল ভেঙ্গে মুক্ত বিশ্বাসে উপনীত হওয়াটাই হচ্ছে মানুষের আসল স্বাধীনতা। কারন মুক্ত বিশ্বাস হচ্ছে সকল সাফল্য, সকল অর্জনের ভিত্তি। বিশ্বাসই রোগ নিরাময় করে, ব্যর্থতাকে সাফল্যে আর অশান্তি কে প্রশান্তি তে রুপান্তরিত করে। বিশ্বাসই মেধাকে বিকশিত করে, যোগ্যতাকে কাজে লাগায়, দক্ষতা সৃষ্টি করে। মুক্ত বিশ্বাস থেকেই শুরু হয় মানুষের মানবিকতার উত্থান পর্ব। আর তখনই সে বুঝতে পারে সে সৃষ্টির সেরা জীব বা আশরাফুল মাখলুকাত। নিজের অসীম শক্তি ও সম্ভাবনা কে বুঝতে পারে। লোভ-লালসা, ভয়-ভীতি, কাপুরুষতা ও প্রবৃত্তির শৃঙ্খল যা অনন্য মানবসত্ত্বা কে বন্দী করে রেখেছে, তা থেকে নিজেকে মুক্ত করার শক্তি তার মধ্যে জন্ম নেয়। সে মুক্তি পায় প্রাত্যহিক জীবনের ক্লান্তিকর একঘেয়েমি থেকে। মুক্ত বিশ্বাস প্রতিটি কাজে মন কে করে একাত্ন। আর কাজের সাথে একাত্ন হতে পারলে প্রতিটি কাজ ই হয়ে ওঠে আনন্দের উৎস। দৈনন্দিন জীবন বেশির ভাগ চিন্তাশীল মানুষের জন্যই যুগে যুগে ছিল এক ক্লান্তিকর বিড়ম্বনা। এই ক্লান্তিকর বিড়ম্বনা থেকে মুক্তির পথ সচেতন মানুষ সব সময়ই খুজেছে। এক শিষ্য গুরুর কাছে বললেন, এই ভাত খাওয়া, গোসল করা, কাপড় পরা, সংসার করা, প্রার্থনা করা-এই একঘেয়েমি থেকে মুক্তি চাই। গুরু বললেন, ভাত খাও, গোসল কর, কাপড় পর, সংসার কর, প্রার্থনা কর। কিছুদিন পর শিষ্য গুরুর কাছে আবার একই সমস্যার সমাধান চাইলেন। কিন্তু গুরুর সেই একই জবাব, একই নির্দেশ। গুরুর কথার মর্মার্থ উপল্বধি করতে শিষ্যের লেগেছিল এক যুগ। এক যুগ পরে তিনি বুঝেছিলেন, যান্ত্রিকতার স্বয়ংচালিত যন্ত্রের মত কাজ করে যাবার ফলেই আমাদের প্রাত্যহিক কাজে একঘেয়েমি চলে আসে। বেশিরভাগ সময়েই মন অতীতে বা ভবিষ্যতে বিচরণ করে বলেই আমরা বর্তমানকে পুরোপুরি উপভোগ করতে ব্যর্থ হই। তাই বর্তমান হয়ে ওঠে একঘেয়ে। দিনের প্রতিটি কাজের সাথে চিত্তকে একাগ্র করতে পারলে, প্রতিটি কাজের মাঝে আত্ননিমগ্ন হতে পারলে, মনোযোগ নিবদ্ধ করতে পারলেই যান্ত্রিকতার একঘেয়েমি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তখন প্রতিদিনের প্রতি লোকমা খাবার, প্রতিবারের গোসল, প্রতিটি কাপড়, প্রতিবার স্ত্রীর সাথে আলাপন, দৈনন্দিন দায়িত্ব ও কর্তব্য-অর্থাৎ প্রতিটি কাজই মনে হবে এ এক নতুন জগত, এ এক নতুন জীবন, এ এক নতুন আনন্দভুবন। ভ্রান্ত ধারণা ও শৃঙ্খলমুক্তির পথ হচ্ছে মেডিটেশন। কারন মেডিটেশন আপনার মনকে বর্তমানে নিয়ে আসে। মেডিটেশন অতীতের ব্যর্থতার গ্লানি আর ভবিষ্যতের আশঙ্কা থেকে মনকে মুক্ত করে। মেডিটেশন আপনার মনকে আত্ননিমগ্ন করে। আপনার মনকে উদ্ভাসিত করে নতুন জ্ঞান আর উপলব্ধিতে। মেডিটেশনের মাধ্যমেই আপনি কানেক্টেড হতে পারেন আপনার “অন্তরের আমি”র সাথে, আপনার শক্তির মূল উৎসের সাথে। এই আত্নশক্তির আবিস্কার ও আত্ন অনুভব এমন এক মুক্ত বিশ্বাস-যা আপনাকে সকল শিকল থেকে মুক্ত করবে, দৈনন্দিন একঘেয়েমি রুপান্তরিত হবে আনন্দে। আপনার উত্তরণ ঘটবে এক অনন্য মানুষে। আপনি পাবেন আপনার প্রথম ও পরিপূর্ণ স্বাধীনতা। আর তাই হালের হলিউড/বলিউডের সেলিব্রেটি তথা আপামর সচেতন মানুষেরা মেডিটেশন এর সুফল জানার পর নিয়মিত মেডিটেশন করছেন। এমন কি পৃথিবীর বিভিন্ন উন্নত দেশ গুলোতে হাইস্কুল লেভেল থেকেই মেডিটেশন এর ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। যাত্রা হোক শুরুঃ সবকিছুই পরিবর্তনশীল। আনন্দ-দুঃখ, হাসি-কান্না পার্থিব কোন কিছুই স্থায়ী নয়। আপনার আজকের যে সাফল্য বা ব্যর্থতা তা-ও স্থায়ী নয়। কারন সময় এগিয়ে চলে আর সময়ের সাথে সব কিছুই পরিবর্তিত হয়। তবে এ পরিবর্তন ভালোর দিকে যাবে নাকি খারাপের দিকে তা নির্ভর করবে আপনার উপর। কারন আপনি যদি বর্তমানে সমস্যা ভারাক্রান্ত বা ব্যর্থ বা হতাশাগ্রস্থ হয়ে থাকেন, তাহলে তার কারন হচ্ছে অতীতে আপনার মনে অবচেতনে প্রদত্ত ভুল প্রোগ্রামিং। এ প্রোগ্রামিং আপনার জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে দু’ভাবেই হতে পারে। অবশ্য এ জন্য ভেঙ্গে পড়ার কিছু নেই, দার্শনিক কনফুসিয়াস খুব চমৎকার ভাবে বলেছেন, “ব্যর্থতার মাঝেই সুপ্ত থাকে সাফল্যের বীজ”। আপনি সাফল্যের এই বীজকে লালন করুন। মনের অবচেতনের তথ্যভান্ডারকে পুনর্বিন্যস্ত করুন। মন আলাদিনের জাদুর চেরাগের মতই আপনাকে সাফল্যের স্বর্ণশিখরে নিয়ে যাবে। চাবিকাঠিঃ বিশ্বাস মনের শক্তি অসীম। তবে এ শক্তি কে কাজে লাগাতে হলে প্রথমত প্রয়োজন এ শক্তির উপর বিশ্বাস অর্থাৎ আত্নবিশ্বাস। আমি পারি, আমি পারব এ বিশ্বাস যে সাফল্যের জন্য কত গুরুত্বপুর্ণ তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। কারন যুগে যুগে নিজের শক্তির উপর বিশ্বাসই ইতিহাস সৃষ্টি করেছে, ইতিহাসকে পাল্টে দিয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলেন, “আমি পারব” এই দৃঢ় বিশ্বাসই সকল সাফল্যের ভিত্তি। তারা মনে করেন পারব বলে বিশ্বাস করলেই আপনি পারবেন। এ ধারণা যে কত বাস্তবসম্মত তা দু’একটি উদাহরণ দিলেই পরিস্কার হবে। হাজার বছর ধরে এথলেট বা দৌড়বিদ রা ৪ মিনিটে এক মাইল দৌড়ানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, এটা অসম্ভব। দৈহিক গঠনের কারনেই তা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। মানুষের হাড়ের কাঠামো ও ফুসফুসের গঠন দুটোই এ সাফল্যের পথে অন্তরায় বলে রায় দিলেন তারা। দু’হাজার বছর পার হয়ে গেল এভাবেই। তারপর এলো এক শুভদিন। একজন মানুষ প্রমান করলেন যে বিশেষজ্ঞদের এই ধারণা ভুল। তারপর ঘটল আরও অলৌকিক ঘটনা। রজার ব্যানিস্টার প্রথম ৪ মিনিটে ১ মাইল দৌড়ের ৬ সপ্তাহ পর জন ল্যান্ডি ২ সেকেন্ডের ব্যবধানে ব্যানিস্টারের রেকর্ড ভঙ্গ করে নতুন রেকর্ড করেন। তারপর থেকে হাজারের ও বেশি দৌড়বিদ ৪ মিনিটের রেকর্ড ভঙ্গ করেছেন। যখন অসম্ভব মনে করা হত তখন কেউই পারেনি। আর একবার করা সম্ভব এই বিশ্বাস করার পর সেই রেকর্ড ভাঙ্গার হিড়িক পড়ে যায়। শুধু দৌড় বা প্রতিযোগীতার ক্ষেত্রেই নয়, জীবনের যে কোন ক্ষেত্রেই “বিশ্বাস” শব্দটি মনের এমন এক শক্তির প্রতিক, যার কোন যৌক্তিক সীমানা নেই। যেখানে সফলতা, সেখানেই রয়েছে গভীর বিশ্বাস। বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসন বিশ্বাস করতেন যে, তিনি একটি সঠিক বৈদ্যুতিক বাতে আবিস্কার করতে পারবেন। এই বিশ্বাসই তার গবেষণায় ১০ হাজার বার ব্যর্থতার পর ও তাকে ঠিকই সাফল্যের চূড়ায় পৌছে দিয়েছে। তিনি সক্ষম হয়েছিলেন সঠিক ফিলামেন্ট ব্যবহার করে একটি সঠিক বৈদ্যুতিক বাতি তৈরী করতে। শুধু টমাস এডিসন ই নন, এরকম হাজারো সফল মানুষদের উদাহরণ দেওয়া যাবে যারা শুধু বিশ্বাসের বলে বলিয়ান হয়ে ব্যর্থতার দুয়ার থেকে সাফল্যকে ছিনিয়ে এনেছিলেন। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যারা আজ ধনকুবের হিসাবে পরিচিত তাদের শতকরা নব্বুই ভাগই খুবই সাধারণ অবস্থা থেকে এসেছেন। মার্কিন ধনকুবের এ্যান্ড্রু কার্নেগীর কথাই ধরা যাক, তিনি তার সময়ের সব চাইতে ধনীলোক ছিলেন। কিন্তু প্রথম জীবনে তিনি ছিলেন বস্তির এক সাধারণ ছেলে। যখন তার বয়স ১২ বছর, তখন তার পরনের ছেড়া-ময়লা আর মলিন পোষাক দেখে পাবলিক পার্কের দারোয়ান তাকে পার্কের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয় নি। সেদিন তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, যেদিন তার টাকা হবে সেদিন তিনি এই পার্ক কিনে ফেলবেন। ৩০ বছর পর ধরে সেই প্রতিজ্ঞা ও বিশ্বাস বুকে লালন করে তিনি সফল হয়েছিলেন। তিনি পার্কটি কিনেছিলেন এবং সেই পার্কে নতুন একটি সাইনবোর্ড লাগিয়েছিলেন। তাতে লেখা ছিলঃ “আজ থেকে দিনে বা রাতে, যেকোন মানুষ যেকোন পোষাকে এই পার্কে প্রবেশ করতে পারবে”। মৃত্যুর আগে তিনি তার সকল সম্পদ মানুষের কল্যাণে দান করে যান। মনের শক্তি দিয়ে মানুষ যে রোগ ও দৈহিক পঙ্গুত্বকে ও উপহাস করতে পারে তার প্রমাণ বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং। লিখতে পারেন না, কথা বলতে পারেন না, দুরারোগ্য মোটর নিউরন ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে ক্রমান্বয়ে নিঃশেষ হবার পথেও তিনি বিশেষ ভাবে তৈরি কম্পিউটারের সাহায্যে রচনা করেছেন বর্তমান যুগের বিজ্ঞান জগতের সবচাইতে আলোড়ন সৃষ্টিকারী গ্রন্থ “এ ব্রিফ হিস্ট্রি অফ টাইম”। হুইলচেয়ার তুলে যাকে বিছানায় নিতে হয়, তিনি অবলিলায় মহাবিশ্ব পরিভ্রমন করে উপহার দিয়েছেন বিশ্বসৃষ্টির নতুন তত্ত্ব। আইনষ্টাইনের পর তাকেই মনে করা হচ্ছে বিশ্বের প্রধান বিজ্ঞানী। আপনি যুক্তিবাদী ও বিজ্ঞানমনস্ক হলে এদের মত আপনাকে ও মনশক্তিতে বিশ্বাসী হতে হবে। নিজের প্রতি আস্থা রাখতে হবে। নিজেকে সম্মান করতে হবে। এদের মত আপনার সম্ভাবনা ও অনন্ত। আপনি ও এদের মত অমুল্য সম্পদের মালিক। কিন্তু সে সম্পর্কে আপনি সচেতন নন। আর আপনার এই অমুল্য সম্পদ হচ্ছে আপনার ব্রেন বা মস্তিস্ক। নিউরো সাইন্টিস্টরা বলেন, মানুষের মস্তিস্ক সর্বাধুনিক কম্পিউটারের চাইতেও প্রায় ১০লক্ষ গুন বেশি শক্তিশালী। তাই দামের হিসাব করলে একটি ভাল কনফিগারেশনের কম্পিউটারের দাম যদি ৫০ হাজার টাকা হয় তাহলে আপনার ব্রেনের দাম দাড়াচ্ছে কমপক্ষে পাঁচ হাজার কোটি টাকা! আর আপনি সব সময় এই পাঁচ হাজার কোটি টাকার সম্পদ আপনার ই ঘাড়ের উপর সারাক্ষন বয়ে বেড়াচ্ছেন! এরপর ও যদি আপনি নিজেকে গরীব মনে করেন, তাহলে আপনার দারিদ্রের কারন আপনার অভাব নয়-আপনার স্বভাব। কারন আপনি আপনার ব্রেনের মাত্র ৪ থেকে ৫ শতাংশ ব্যবহার করছেন। তাই আপনি ও যদি আপনার ব্রেনের এই সুবিশাল ক্ষমতাকে এদের মত করে কাজে লাগাতে পারেন তাহলে নিঃসন্দেহে আপনি ও সফল ও খ্যাতিমান হতে পারবেন। দৃষ্টিভঙ্গিবদলান, আপনারজীবনবদলেযাবে। ডাঃ এলেন গোল্ডষ্টেইন, ডাঃ জন মটিল, ডাঃ ওয়াইল্ডার পেনফিল্ড ও ডাঃ ই রয় জন দীর্ঘ গবেষণার পর বলেছেন, একজন প্রোগ্রামার কম্পিউটারকে পরিচালিত করে তেমনি আমাদের মন মস্তিস্ককে পরিচালিত করে। আর মন পরিচালিত হয় আমাদের এ্যটিচ্যুড বা দৃষ্টিভঙ্গি বা নিয়ত দ্বারা। আমাদের মস্তিস্ক ও মন কে কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। মস্তিস্ক হচ্ছে হার্ডওয়্যার এবং মন হচ্ছে সফটওয়্যার। সফটওয়্যারের মাধ্যমে কম্পিউটারে কোন ইনপুট দিলে কম্পিউটার যেমন সে অনুযায়ী আউটপুট বা ফলাফল প্রদর্শন করে তেমনি নতুন তথ্য ও বিশ্বাস আমাদের ব্রেন বা মস্তিস্কে নতুন ডেনড্রাইট, নতুন উদ্দীপনার সৃষ্টি করে। তখন সাথে সাথে বদলে যায় মস্তিস্কের কর্ম প্রবাহের প্যাটার্ন। মস্তিস্ক তখন নতুন বিশ্বাস বা দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে নতুন বাস্তবতা উপহার দেয় আউটপুট বা ফলাফল স্বরুপ। নতুন বাস্তবতা ভাল হবে নাকি খারাপ হবে তা নির্ভর করে মস্তিস্কে দেওয়া তথ্য বা প্রোগ্রামের ভাল-মন্দের উপর। কল্যানকর তথ্য ও বিশ্বাস কল্যানকর বাস্তবতা সৃষ্টি করে আর ক্ষতিকর বিশ্বাস বা তথ্য খারাপ বা ক্ষতিকর বাস্তবতা সৃষ্টি করে। আমাদের পবিত্র হাদিস শরীফে ও তাই উল্লেখ আছে, “ইন্না মা’আল আ’মালু বিননিয়াত” অর্থ্যাৎ “সকল কর্মই নিয়তের উপর নির্ভরশীল”। তাই নিঃসন্দেহে বলা যায়, জীবনের নতুন বাস্তবতার চাবিকাঠি হচ্ছে দৃষ্টিভঙ্গি বা নিয়ত। বিজ্ঞানীরা বলেন, দৃষ্টিভঙ্গি দু’ধরনের। এক. প্রো-এ্যাকটিভ দুই. রি-এ্যাকটিভ। প্রো-এ্যাকটিভ অর্থ হচ্ছে যে কোন পরিস্থিতিতে উত্তেজিত বা আবেগপ্রবণ না হয়ে ঠান্ডা মাথায় চিন্তা-ভাবনা করে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ বা সিদ্ধান্ত গ্রহন। প্রো-এ্যাকটিভ অর্থ হচ্ছে অন্যের কাজের বা কথার প্রতিক্রিয়া হিসাবে কোন কাজ বা আচরণ না করা। সব সময় নিজের নির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অনুযায়ী কাজ করে যাওয়া। প্রো-এ্যাকটিভ অর্থ হচ্ছে কি আছে কি নেই তা নিয়ে হা-হুতাশ না করে যা আছে তা নিয়েই সুপরিকল্পিত ভাবে কাজ শুরু করা। প্রো-এ্যাকটিভ দৃষ্টিভঙ্গি সবসময় সাফল্য বা বিজয় ছিনিয়ে আনে। অপরদিকে রি-এ্যাকটিভ দৃষ্টিভঙ্গি সবসময় ব্যর্থতা, হতাশা ও অশান্তি সৃষ্টি করে। রি-এ্যাকটিভ হলে নিয়ন্ত্রন তখন নিজের হাতে থাকে না, অন্যের হাতে চলে যায়। আপনি যখন অন্যের কথায় কষ্ট পান, অন্যের কথায় রেগে যান, অন্যের আচরণে রাগে ফেটে পড়েন, অন্যের তোষামোদি-চাটুকারিতায় উৎফুল্ল হয়ে ওঠেন, অন্যের কথায় নাচেন তখন বুঝতে হবে নিয়ন্ত্রন আর আপনার হাতে নাই, নিয়ন্ত্রন অন্যের হাতে। রি-এ্যাকটিভ হলে বা নিয়ন্ত্রন অন্যের হাতে চলে গেলে কি অবস্থা হয় তা দু’টি উদাহরণ দিলেই ব্যাপারটা স্পষ্ট হবে। এক মার্কিন কোটিপতির একমাত্র সুন্দরী কন্যা। কন্যার ছেলে-বন্ধুর কোন অভাব নেই। অভাব থাকার কথা ও নয়, একে তো সুন্দরী তার উপর কোটিপতির মেয়ে। তো, মেয়ের বিয়ের বয়স হয়েছে তাই বাবা তাকে ডেকে বললেন, তোমার তো অনেক ছেলে-বন্ধু। এখন তোমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এদের মধ্যে কাকে তুমি বিয়ে করবে। যাকে পছন্দ হয় তাকেই তোমার সাথে বিয়ে দিব। কিন্তু মেয়ের কাকে ছাড়ি কাকে ধরি অবস্থা! ছেলে-বন্ধুর প্রত্যকেই সুন্দর ও যোগ্যতা সম্পন্ন। বাবা ও মেয়ে দু’জনেই চিন্তায় পড়ে গেল। শেষে কি করা যায় ভাবতে ভাবতে একটি বুদ্ধি বেরিয়ে এল। সিদ্ধান্ত হল প্রতিযোগীতা হবে। প্রতিযোগীতায় যে প্রথম হবে তার সাথে তিনি মেয়েকে বিয়ে দেবেন। প্রতিযোগীতার দিন দেখা গেল এলাহি কান্ড। প্রায় শ’খানেক সুন্দর যুবক সুন্দর পরিপাটি পোষাকে ফিটফাট অবস্থায় এসে উপস্থিত। মেয়ের বাবা তখন সবাইকে ডেকে বাড়ির সুইমিং পুলের সামনে নিয়ে গেলেন। সুইমিং পুলের সামনে সবাইকে দাড় করিয়ে বললেন দেখ, প্রতিযোগীতা খুবই সহজ। সাতার প্রতিযোগীতা হবে, যে প্রথম হবে তার সাথে আমার মেয়ের বিয়ে দেব। তবে সুইমিং পুলের পানিতে ঝাপ দেবার আগে ভাল করে খেয়াল করে দেখ পানির নিচে বহু কুমির অপেক্ষা করছে। এই কুমির গুলোকে গত এক মাস ধরে কোন কিছুই খেতে দেওয়া হয়নি। তার কথা শেষ হবার আগেই দেখা গেল এক যুবক পানিতে পড়ে চোখ বন্ধ করে দুই হাত পা নেড়ে সাতরানো শুরু করেছে এবং কুমির গুলো হঠাৎ করে কিছু বুঝে ওঠার আগেই সেই যুবক ভাগ্যক্রমে কিছুক্ষনের মধ্যে সুইমিংপুলের অপর পাড়ে গিয়ে উঠেছে। ঘটনার আকস্মিকতায় সবাই হতভম্ব। বিস্ময়ের ঘোর কাটতেই সেই কোটিপতির মেয়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো যুবকটি কে। বিস্ময়াবিষ্ট কন্ঠে সে বলল, তোমার মত বীরকেই আমি চাচ্ছিলাম। তুমিই একমাত্র আমার স্বামী হবার উপযুক্ত। এদিকে যুবকের রাগ তখনো থামেনি। উত্তেজনায় হাত-পা কাপছে। সে ঝটকা মেরে মেয়েটিকে ছাড়িয়ে চিৎকার করে বলল, “কোন হারামজাদা আমাকে পানিতে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিল, তাকে আগে দেখে নেই”! অবস্থা বুঝুন! সুন্দরী স্ত্রী ও তার কোটিপতি বাবার সকল সম্পদ ওই যুবকের হাতের মুঠোয় এসে গিয়েছিল। ধাক্কা যে-ই দিক, সে সুইমিং পুল অতিক্রম করে সবার চোখে বিজয়ী বীর বলে গণ্য হচ্ছিল কিন্তু শুধুমাত্র তার রাগকে সে নিয়ন্ত্রন করতে না পারায় সৌভাগ্য এসে ও তা হাতের মুঠো থেকে বের হয়ে গেল নিমিষেই। অথচ তখনকার মত যদি সে তার রাগটাকে দমন করতে পারত, ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত পরিস্থিতি সামলাতে পারত তাহলে সে মুচকি হেসে বলতে পারত, পুরুষ তো আমি একাই, ওরা আবার পুরুষ নাকি! নিজের জীবন অনুসন্ধান করলে ও আপনি দেখবেন অনেক সুযোগ নষ্টের পিছনে রয়েছে আপনার রাগ, ক্ষোভ ও অভিমান। প্রতিক্রিয়া উত্তেজিত সিদ্ধান্ত কিভাবে ব্যর্থতা ডেকে আনে মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর প্রতিপক্ষরাই তার বড় প্রমাণ। মোহাম্মদ আলী সব সময় দৈহিক দিক থেকে তার চেয়ে শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে পরাজিত করেছেন। কারন তার বক্সিং এর কৌশল ছিল অভিনব, একেবারেই ইউনিক। তিনি বক্সিং রিং এ নেমেই লাফাতে শুরু করতেন এবং হাত চালানোর চেয়ে লাফাতেন বেশি আর সেই সাথে শুরু করতেন প্রতিপক্ষকে তুমুল গালি-গালাজ! তার গালি-গালাজে প্রতিপক্ষ বেশিরভাগ সময়েই প্রবলভাবে উত্তেজিত হয়ে তাকে এক ঘুসিতে নক আউট করার জন্য ধেয়ে আসত আর প্রবলবেগে ঘুসি মারত। মোহাম্মদ আলী সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতেন পুরোপুরি। বিদ্যুৎ গতিতে একটু সরে গিয়েই লেফট হুক বসিয়ে দিতেন, ভারসাম্যহীন প্রতিপক্ষ সহজেই ধরাশায়ী হয়ে যেত (কারন প্রবল বেগে কোথাও আঘাত করতে চাইলে এবং আঘাত সেখানে না লাগাতে পারলে শরীরের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়) আসলে রি-এ্যাকটিভ হয়ে, উত্তেজিত হয়ে বা রেগে গিয়ে কোন কাজ করলে সাধারণভাবে কপালে পরাজয় ই জোটে। তাই সব সময় স্মরণে রাখুন, “রেগে গেলেন, তো হেরে গেলেন”। আপনি হয় তো বলবেন, সব সময় কি আর প্রো-এ্যাকটিভ থাকা যায়? একজন অহেতুক গালি-গালাজ করল, মা-বাপ তুলে গালি দিল, তখনো কি প্রো-এ্যাকটিভ থাকা সম্ভব? খুব সম্ভব। এক্ষেত্রে মহামতি বুদ্ধের একটি ঘটনা উল্লেখ করা যায়। মহামতি বুদ্ধ তখন বৃদ্ধ। এক চালবাজ লোক ভাবল বুদ্ধ তো আর বেশিদিন বাচবেন না, তার সাথে কিছুদিন থেকে যদি কায়দ-কানুন, টেকনিক শিখে নেওয়া যায় তাহলে বুদ্ধ মারা যাবার পর নিজেকে বুদ্ধের অবতার ঘোষনা করে দেব। তখন আর পরিশ্রম করতে হবে না, বসে বসে দান-দক্ষিণা গ্রহন করে জীবন টা মহাসুখেই কাটিয়ে দেব। যেই ভাবা সেই কাজ। ভন্ড শিষ্য টি তখন একেবারে নিবেদিত প্রাণ ভক্ত শিষ্যর মত ভান করে বুদ্ধ’র সেবা করতে লাগল। মহামতি বুদ্ধ তার মতলব বুঝলে ও কিছু বললেন না। এভাবে দু’বছর পার হবার পর ভন্ড শিষ্যটি বুঝলো সে বুদ্ধ’র কাছ থেকে ধ্যানের ক্ষমতা বা আধ্যাত্নিক শক্তি কিছু পায় নি। কারন নিয়ত পরিস্কার না থাকলে ধ্যান এর ক্ষমতা বা আধ্যাত্নিক শক্তি লাভ করা যায় না। ফলে শিষ্যটি মহামতি বুদ্ধ’র উপর ভীষন ক্ষুব্দ হল। মনে মনে ঠিক করল সে এর প্রতিশোধ নেবে। সে সুযোগ খুজতে থাকল। সুযোগ এসে গেল। একদিন ভোরবেলা মহামতি বুদ্ধ একা বসে আছেন, ভন্ড ভাবল এই সুযোগ। সে কাছে গিয়ে বুদ্ধকে অশ্রাব্য গালি-গালাজ করতে লাগল। বুদ্ধ চুপচাপ শুনছেন, কিছু বলছেন না। অনেকক্ষন গালি-গালাজ করার পর শিষ্যটি যখন একটু থামল বুদ্ধ তখন শান্তভাবে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আমি কি তোমাকে একটা প্রশ্ন করতে পারি? ভন্ড শিষ্যের মেজাজ তখন ও ঠান্ডা হয় নি। সে বলল করেন, কি জিজ্ঞাসা করবেন। বুদ্ধ বললেন, ধরো তোমার কোন জিনিস তুমি কাউকে দিতে চাচ্ছো, কিন্তু সে যদি না নেয় তাহলে জিনিসগুলো কার কাছে থাকবে? উত্তেজিত শিষ্য জবাব দিল, এত সহজ বিষয়, এটাও আপনি বোঝেন না? আমার কোন জিনিস আমি কাউকে দিতে চাচ্ছি কিন্তু যদি সে না নেয় তাহলে সে গুলো আমারই থাকবে। বুদ্ধ আবার জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার জিনিস তুমি যাকে দিতে চাচ্ছো সে না নিলে তা তোমারই থাকবে? শিষ্য জবাব দিল, হ্যাঁ, আমার ই থাকবে। এবার মহামতি বুদ্ধ বললেন, তাহলে এতক্ষন ধরে তুমি আমাকে যা (গালি-গালাজ) উপহার দিলে আমি তার কিছুই নিলাম না! আপনি ও আপনার জীবনে ব্যক্তিগত গালি-গালাজ, অপমানসুচক কথা-বার্তার জবাবে মহামতি বুদ্ধের এই কৌশল অবলম্বন করে দেখতে পারেন। আসলে একজন মানুষ যখন অযৌক্তিক আচরণ করে, গালি-গালাজ করে, মা-বাপ তুলে গাল দেয় তখন আপনি ও পাল্টা জবাবে তাকে ও সমান ভাবে বলতে পারেন। কিন্তু তার বাবা-মাকে গালি দিয়ে তো আপনি নিজেকেই অপমানিত করলেন। সে গালি-গালাজ করে আপনার শান্তি নষ্ট করতে এসেছিল, তার সাথে সমানতালে পাল্লা দেবার অর্থই হচ্ছে তার উদ্দেশ্যকে সফল করা। তার চেয়ে কিছুক্ষন গালি শোনার পরে যদি আপনি বিনয়ের সাথে তাকে বলেন, ভাইজান! আপনি অনেক মেহেরবান। অনেক কিছু আমাকে দিলেন কিন্তু এগুলো রাখার জায়গা আমার কাছে নাই, আমি দুঃখিত আমি এর কিছুই নিতে পারছিনা/নিলাম না। এগুলো আপনারই থাক। একথা বলার পর দেখবেন অপরপক্ষ দাত কামড়ে নিজেই অপমানিত হয়ে চলে যাচ্ছে। তার গালি-গালাজ যে আপনার উপর কোনই প্রভাব বিস্তার করতে পারলোনা এটাই তার পরাজয়। আর এ পরাজয়ের যন্ত্রনা সে বহুদিন বয়ে বেড়াবে। সে এসেছিল আপনার শান্তি নষ্ট করতে, কিন্তু শান্ত থেকে ঠান্ডা মাথায় আপনি তাকে পরাজিত করলেন। আপনার চারপাশে তাকালে দেখবেন, যে ক্ষ্যাপে তাকেই ক্ষ্যাপানো হয়। স্কুল-কলেজ, বন্ধু-বান্ধব, ভাই-বোন এদের দিকে লক্ষ্য করে দেখবেন যে একটু বেশি সংবেদনশীল, সহজেই ক্ষেপে যায়-অন্যরা তাকে ইচ্ছাকৃত ভাবে খোঁচা দিয়ে, কটাক্ষ করে, মন্তব্য করে, উপাধি দিয়ে, ক্ষেপিয়ে এক ধরনের বিকৃত আনন্দ পায়। এ ধরনের পরিস্থিতি এড়ানোর একটাই পথ, শান্ত থাকা। কোন ধরনের প্রতিক্রিয়া না দেখানো। এবং ভাব দেখান আপনি তাদের এই কটাক্ষ বা ক্ষ্যাপানোকে মোটেই পাত্তা দিচ্ছেন না সেজন্য অবস্থা বুঝে মুচকি মুচকি একটু হাসুন দেখবেন অপর পক্ষ হতাশ হয়ে রণে ভঙ্গ দেবে। এভাবে যদি কিছুদিন ক্রমাগত আপনি না ক্ষেপে থাকতে পারেন, দেখবেন এরপর আর কেউই আপনাকে ক্ষ্যাপাতে আসছেনা। তাই দৃষ্টিভঙ্গি বদলান, আপনার জীবন বদলে যাবে। শক্তির উৎসঃ মন মানুষের শক্তির উৎস দু’টি। ১. দৈহিক শক্তি। ২. মানসিক শক্তি। দৈহিক শক্তির লিমিট আছে কিন্তু মানসিক শক্তি অফুরন্ত। দেহের পক্ষে অসম্ভব এমন প্রতিটি কাজ মন অবলীলায় করে যেতে পারে। আপাত যুক্তি বিচারে যা অসম্ভব মন তাকে ও সম্ভব করতে পারে। আর প্রতিটা মানুষের ই মন রয়েছে তবে প্রতিভাবান ও সাধারণ মানুষের মনের পার্থক্য হল প্রতিভাবান ব্যক্তি মনের এই শক্তি কে নিয়ন্ত্রন করে নিজস্ব সৃজনশীল পন্থায় ব্যবহার করে সফল হন আর সাধারণ মানুষ মন কে নিয়ন্ত্রন না করে মনের দ্বারা পরিচালিত হয়ে মনের অসীম শক্তি কে অপচয় করে ব্যর্থ হয়। মনকে নিয়ন্ত্রন করার আগে আমাদের অবশ্য মন সম্পর্কে একটা স্পস্ট ধারণা রাখা দরকার। মনোবিজ্ঞানীরা মন কে তিন ভাগে ভাগ করেছেন। ১. সচেতন। ২. অবচেতন এবং ৩. অচেতন। সচেতন মন সব কিছুকেই নিজের ধারণা, যুক্তি ও বিশ্বাস দ্বারা বিচার-বিশ্লেষন করে। কিন্তু অবচেতন মন ভাল-মন্দ কোন কিছুই বিচার-বিশ্লেষন করতে যায় না, সে যে তথ্য ও আইডিয়া পায় সেভাবেই প্রভাবিত হয়ে কাজ শুরু করে দেয়। প্রভাব টা আপনার জন্য ভাল কি খারাপ সেটা বিবেচনা করে না। ভয়, ক্রোধ বা বিশ্বাস দ্বারা গভীরভাবে তাড়িত হলে যে কোন ধরনের প্রভাবে অবচেতন মন সহজেই সাড়া দেয়। মনের অবচেতন অংশ আবার সচেতন অংশের কথা সহজেই শোনে। আমরা জানি, মনের প্রতিটি কাজ করে দেয় আমাদের ব্রেন। সক্রিয় অবস্থায় ব্রেন থেকে খুব মৃদু বিদ্যুৎতরঙ্গ বের হয়, বিজ্ঞানীরা একে বলেন ব্রেনওয়েভ। ১৯২৯ সালে ডাঃ হ্যান্স বার্জার ইলেক্ট্রো এনসেফেলোগ্রাফ (ইইজি) যন্ত্র দ্বারা ব্রেন এর এই ওয়েভ বা তরঙ্গ মাপেন। দেখা যায়, মানসিক চাপ, সতর্কতা, এবং রাগান্বিত অবস্থায় ব্রেনের এই বৈদ্যুতিক বিকিরণ বা ব্রেনওয়েভ বেড়ে যায়। তখন ব্রেনওয়েভ এর ফ্রিকোয়েন্সি দাঁড়ায় প্রতি সেকেন্ডে ১৪ সাইকল থেকে ২৬ সাইকল পর্যন্ত। একে বলা হয় বিটা ব্রেনওয়েভ। চোখ বন্ধ করে বিশ্রামকালে একটু ঘুমঘুম ভাব সৃষ্টি হলে ব্রেনের বৈদ্যুতিক বিকিরন কমে গিয়ে এই ব্রেনওয়েভ ফ্রিকোয়েন্সি দাঁড়ায় প্রতি সেকেন্ডে ৮ থেকে ১৩ সাইকল। একে বলা হয় আলফা ব্রেনওয়েভ। এর পর রয়েছে গভীর নিদ্রাকালীন ব্রেনওয়েভ। এর ফ্রিকোয়েন্সি হচ্ছে প্রতি সেকেন্ডে ০.৫ থেকে ৩ সাইকল। একে বলা হয় ডেল্টা ব্রেনওয়েভ। ব্রেনওয়েভ ফ্রিকোয়েন্সি প্রতি সেকেন্ডি ২৭ বা তার উপরে উঠে যেতে পারে হঠাৎ উত্তেজিত অবস্থার ফলে। একে বলা হয় গামা ব্রেনওয়েভ। মেডিটেশন: মনের লাগাম ধরার উপায় আমরা উপরোক্ত সারণী তে দেখলাম বিশ্রাম, তন্দ্রা নিদ্রাকালীন সময়ে মন সবচেয়ে সৃজনশীল থাকে ও ভালভাবে কাজ করে। তাই এখন যদি আমরা কৃত্রিমভাবে শিথিলায়ন (Relaxation) এর মাধ্যমে আমরা শরীর ও মনে বিশ্রাম ও তন্দ্রাকালীন আবহ সৃষ্টি করতে পারি, তাহলে ও ব্রেনওয়েভ ফ্রিকোয়েন্সি নেমে আসবে আলফা/থিটা লেভেল এ। আর ব্রেনওয়েভ কে আলফা/থিটা লেভেলে নামিয়ে আনতে পারলেই মেডিটেটিভ লেভেল তৈরি হবে। তখন আপনি প্রবেশ করতে পারবেন মনের আরো গভীরে। তাহলে আপনি আপনার সচেতন ও অবচেতন মনের মধ্যে সংযোগ ঘটিয়ে যথাযথভাবে মন কে নির্দেশ দিতে পারবেন। ফলে আপনি আপনার মন কে আপনার ইচ্ছামত আপনার ও অপরের কল্যানের কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। আসুন আমরা জানতে চেষ্টা করি আমরা মেডিটেশন কেন করব। মেডিটেশনের অনেক উপকারীতা আছে, এর কিছু কিছু দিক নিয়ে সংক্ষেপে বলার চেষ্টা করব যা নিঃসন্দেহে আপনার মেডিটেশনে উৎসাহ বাড়াবে। ১. মেডিটেশন এর সময় শরীরের কার্যক্রম মনিটর ও নিয়ন্ত্রন করার দ্বায়িত্ব থেকে আমাদের ব্রেন ও মন অব্যাহতি লাভ করে। মন ও ব্রেন অপ্রয়োজনীয় শারীরিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রনের দ্বায়িত্ব থেকে মুক্তি পাওয়ায় প্রকৃতির গভীর ও সূক্ষ্ম স্পন্দন অনুভব করার ক্ষমতা অর্জন করে। নিঝুম ও নিস্তব্ধ পরিবেশে আমরা যেমন একটা মৃদু শব্দ ও শুনে ফেলি তেমনি মন ব্রেন যখন শিথিল ও শান্ত থাকে তখন প্রকৃতির সূক্ষ্ম স্পন্দন অনুভব করা সহজ হয়। ২. আমরা প্রায় শুনে থাকি, অন্ধদের মাঝে একটা ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় কাজ করে। এ কথার মধ্যে অবশ্যই সত্যতা আছে। কারন একটা ইন্দ্রিয় যখন কাজ করা থেকে বিরত থাকে তখন অন্য ইন্দ্রিয় গুলো তার ক্ষতি পুষিয়ে নেবার জন্য আরো বেশি সজাগ হয়ে ওঠে। এজন্য আমরা প্রায় দেখি সঙ্গীতের কোন সূক্ষ্ম সুর বোঝার/অনুভব করার জন্য সঙ্গীত বোদ্ধারা চোখ বন্ধ করে ফেলেন। আমরা নিজেরা ও কোন কিছু মনে করার চেষ্টা করতে গিয়ে অনেক সময় চোখ বন্ধ করি। এর ব্যাখ্যা হল, ইন্দ্রিয়ের কার্যক্রম বন্ধের সাথে সাথে মনের এনার্জি পুনর্বিন্যস্ত হয় এবং মনের উচ্চতর মাধ্যম গুলো (Higher faculties) কাজ শুরু করে। এর ফলে অন্যান্য ইন্দ্রিয় গুলো বাড়তি এনার্জি পেয়ে সূক্ষ্ম ও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তাই নিয়মিত মেডিটেশন করলে দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তি বাড়ে এবং ঘ্রাণেন্দ্রিয় সজাগ হয়। ৩. মেডিটেশন এর সময় ধ্যানাবস্থা সৃষ্টি হয়। আপনি নিজ মনের গভীরে প্রবেশ করেন। ফলে আমাদের শরীর ও মন হয় শিথিল এবং প্রশান্ত। আর শরীর ও মন শিথিল হলে সেখানে টেনশন বা দুশ্চিন্তা থাকবেনা। এক্ষেত্রে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (স.) এর একটি বাণী বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্যঃ “তোমরা উত্তেজিত অবস্থায় দাঁড়ানো থাকলে বসে পড়, বসা থাকলে শুয়ে পড়”। শরীর ও মন শিথিলায়নের এই বিশাল প্রাসাদ এই তত্ত্বের উপরই দাঁড়িয়ে আছে। কারন, উত্তেজনার নিয়ম ই হচ্ছে কেউ শোয়া অবস্থায় উত্তজিত হলে উঠে বসে পড়ে, আর বসা থাকলে উঠে দাঁড়িয়ে হাত পা ছোড়াছুড়ি বা লাফালাফি শুরু করে দেয়। তাই উত্তেজনার বিপরীত অবস্থান হচ্ছে হাত পা ছেড়ে শুয়ে পড়া। এ কারনে দেখা যায় শিথিল শরীরে কোন ধ্বংসাত্নক আবেগ কাজ করতে পারে না। নিয়মিত মেডিটেশনে এই ধ্বংসাত্নক আবেগ হ্রাস পেতে থাকে এবং এক সময় তা বিলুপ্ত হয়ে যায়। ৪. ডা. হার্বার্ট বেনসন দীর্ঘ গবেষণায় প্রমাণ করেছেন যে, শরীর শিথিল থাকা অবস্থায় হার্টবিট কমে, দেহে ব্যথা বা আঘাতের অনুভুতি হ্রাস পায়, উচ্চ রক্তচাপ কমে, দম ধীর গতি লাভ করে, রক্তে এড্রেনালিনের পরিমাণ হ্রাস পায়, রক্তে ল্যাকটেটের পরিমাণ কমে, দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, শরীর নিজে থেকেই রোগমুক্তির প্রক্রিয়াকে সক্রিয় করে তোলে। ৫. শরীর শিথিল অবস্থায় সচেতনতার পরিধি বৃদ্ধি পায়। শরীর সক্রিয় রাখার জন্য যে এনার্জি ব্যয় হত তা চলে আসে মনের আওতায় ফলে মন তা বেশি কাজে লাগাতে পারে তার উচ্চতর ক্রিয়া বা দক্ষতা বৃদ্ধিতে। তাই মনের চিন্তার ক্ষমতা (Thought Power) আগের চাইতে অনেকগুন বৃদ্ধি পায়। ৬. নিয়মিত মেডিটেশনে মনের উপর নিয়ন্ত্রন ক্ষমতা বাড়ে। শিথিল অবস্থায় ব্রেনে আলফা ওয়েভ সৃষ্টি হয়। আর সাইকিক পাওয়ার ট্রেনিং এর একটি গুরুত্বপুর্ণ পর্যায় হচ্ছে ইচ্ছেমত ব্রেনে আলফা ওয়েভ সৃষ্টি করতে সক্ষম হওয়া। শিথিলায়ন, মেডিটেশন বা ধ্যানাবস্থায় অবস্থানের সুখই আলাদা। এটা এমন একটা সুখ ও আনন্দানুভূতি অনুভবের বিষয়, যা শব্দে বা ভাষায় ব্যক্ত করা যায় না। আপনি মনের যত গভীরে প্রবেশ করবেন, ততই প্রশান্তি পাবেন। আপনি এক সময় অবাক বিস্ময়ে দেখবেন টেনশন, দুশ্চিন্তা, রাগ-ক্ষোভ-অভিমান, দুঃখ-কষ্ট বা ঘৃণা আপনার ধারে কাছেই আসতে পারছে না। টেনশন, দুশ্চিন্তা, রাগ-ক্ষোভে যে শক্তির অপচয় হত ব্রেন তখন সে শক্তিকে তখন কাজে লাগায় দেহের স্বাস্থ্য উদ্ধারে, মেধার বিকাশে, ভবিষ্যত পরিকল্পনার বাস্তবায়নে, চেতনার বিকাশে। তো আসুন আমরা মেডিটেশনের জন্য প্রস্তুত হই। নিচে থেকে মেডিটেশন এর অডিও ফাইল গুলো ডাউনলোড করে নিন। ১. শিথিলায়ন ২. ভয় 3. নেতিবাচক চিন্তা ৪. রাগ ৫. ক্ষোভ ৬. দুঃখ ৭. অনুশোচনা ৮. মনছবি ৯. মস্তিস্ক ১০. হও উন্নত শীর মেডিটেশনের পূর্ব প্রস্তুতি হিসাবে একটি নির্জন কক্ষ বা জায়গা বেছে নিন যেখানে আপনাকে কেউ বিরক্ত করবেনা। দরজা ভালভাবে বন্ধ করুন এবং মোবাইল/টেলিফোন সাইলেন্ট করে রাখুন। ঢিলে-ঢালা পোশাক পরে আরাম করে চেয়ারে অথবা মেঝে তে আসন পেতে বসুন। অথবা বসে ও করতে পারেন। বসে করলে মেরুদন্ড ও ঘাড় সোজা করে দু হাতের তালু দুই হাটুর উপর রাখুন। হালকা ভাবে চোখ বন্ধ করুন। এরপর কম্পিউটার, মোবাইল/ডিভিডি/সিডি/এমপি থ্রি প্লেয়ার এর হেডফোন কানে লাগিয়ে (অথবা স্পিকার যেভাবে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন) প্লে করুন এবং যেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয় সেভাবে মেডিটেশন করুন। প্রথমদিকে মেডিটেশনের অনুভুতি এক এক জনের ক্ষেত্রে এক এক রকম হতে পারে। কারো কাছে মনে হতে পারে আপনি শুধু চোখ বন্ধ করে বসেছিলেন, কিছুই অনুভব করতে পারেন নি। কারো শরীর ভারি লাগতে পারে, কারো প্রচন্ড গরম অথবা শীত লাগতে পারে। আবার কারো মুখে লালা আসতে পারে এমন কি গলা শুকিয়ে ও যেতে পারে। বসে মেডিটেশন করলে প্রথমদিকে অনেকের পিঠ, ঘাড় অথবা কোমর ব্যথা করতে পারে। তবে এগুলোর যাই ঘটুক না কেন নিয়মিত করে যান, আপনি আস্তে আস্তে মেডিটেশনে পটু হয়ে উঠবেন। তবে স্মরনে রাখুন, মেডিটেশন অডিও শুনে করুন আর বই পড়ে অথবা কোর্স করে করুন, আপনাকে যা বলা হয়েছে শুধু তাই কল্পনা করে যাবেন। যেরকম বলা হচ্ছে ঠিক সেভাবে অবলোকন বা অনুভব করতে পারলেন কিনা তা নিয়ে ভাবার কোন প্রয়োজন নেই। আপনাকে যেভাবে কল্পনা বা অনুভব করতে বলা হচ্ছে, আপনি শুধু ভাবুন বা কল্পনা করবেন যে আপনি সেরকম অনুভব করছেন। তাহলেই আপনি ধীরে ধীরে মেডিটেশনের গভীরে যেতে পারবেন। মেডিটেশনের সুফল পেতে প্রতিদিন সকাল ও রাতে দু’বার মেডিটেশন করুন। নিয়মিত মেডিটেশন আপনার জীবন থেকে সকল ধরণের নেতিবাচক চিন্তা-ধারণা, হতাশা দূর করে আপনাকে করে তুলবে আরো আত্নপ্রত্যয়ী, দৃঢ়চেতা এবং প্রো-এ্যাকটিভ ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন এক অনন্য মানুষে। শুধু উপরোক্ত ১০ টি ই নয় মেডিটেশনের আরো অডিও আছে। যদি কারো লাগে, জানালে লিঙ্ক দিব। আজ এ পর্যন্তই। আপনাদের সাড়া পেলে আবার ও লিখব। ভাল থাকুন সবাই। তথ্যসুত্রঃ কোয়ান্টাম মেথড, আত্নউন্নয়ন এবং ইন্টারনেট
**********************************************

মেডিটেশনের বই ডাউনলোড করুন এবং নিজেই মেডিটেশন শিখুন

মানসিক শান্তি লাভ করার জন্য ধ্যান বা মেডিটেশন করুন।
মনের পরিস্থিতিটা বদলানোর জন্য নিজেকে নিয়মের মধ্যে বেঁধে ফেলুন।
রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। রাতে ঘুম ভালো হলে আপনার মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। মনে ফুর্তি বজায় থাকবে।মন ঠিক থাকলে শরীরও ঠিক থাকে। সুস্থ থাকতে হলে মনকে চাপমুক্ত রাখা খুব জরুরি। কী করে মনকে একেবারে চাপমুক্ত রাখবেন_ চলুন তা জেনে নিই।মনের ভার কম করার জন্য নিজের ইচ্ছার মাত্রাকে বোঝার চেষ্টা করুন। একেবারে নিভৃতে নিজের সঙ্গে একটি দিন কাটিয়ে মনকে বোঝার চেষ্টা করুন।

মেডিটেশনের বই গুলো ফ্রি ডাউনলোড করুন এখান থেকে

 

**************************************************************************************

মানসিকভাবে সুস্থ রয়েছেন কি না জানতে নিজেকে করুন ১৩টি প্রশ:

মানসিকভাবে সুস্থ রয়েছেন কি না জানতে নিজেকে করুন ১৩টি প্রশ:
মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ উইলিয়াম সি মেনিনজার যে কোনো ব্যক্তির নিজস্ব মানসিক সুস্থতা নির্ণয়ে ১৩টি প্রশ্নের উল্লেখ করেছেন।
এসব প্রশ্নের মধ্যে যে কোনো একটির উত্তর নিশ্চিতভাবেহ্যাঁহলে বুঝতে হবে তিনি মানসিক রোগে ভুগছেন এবং অবশ্যই ক্ষেত্রে তাকে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
. আপনি কি সর্বদা আশঙ্কা বোধ করেন?
. আপনি কি অপরিচিত কোনো বিষয়ে মনোনিবেশ করতে অক্ষম?
. কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই আপনি কি সর্বদা অসুখী অস্থিরতা অনুভব করেন?
. আপনি কি ঘন ঘন এবং সহজেই রেগে যান?
. আপনি কি নিয়মিত নিদ্রাহীনতার সমস্যায় ভুগছেন?
. আপনার মেজাজে কি ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে? অর্থাৎ বিষণ্ণতা থেকে প্রফুল্ল আবার বিষণ্ণ বোধ করেন?
. লোকজনের সান্নিধ্য সব সময় কি আপনি অপছন্দ করেন?
. আপনার দৈনন্দিন জীবনে বিঘ্ন ঘটলে আপনি কি অস্থির হয়ে পড়েন?
. আপনার শিশুকে কি আপনার কাছে বিরক্তিকর মনে হয়?
১০. প্রকৃত কারণ ছাড়া আপনি কি ভীতসন্ত্রস্ত থাকেন?
১১. আপনি কি একঘেয়েমিতে ক্লান্ত এবং অবিরাম তিক্ততা অনুভব করেন?
১২. আপনি কি সর্বদা নিজেকে সঠিক এবং অন্যকে ভুল বিবেচনা করেন?
১৩. যেখানে চিকিৎসক আপনার শারীরিক ব্যথার কোনো কারণ খুঁজে পান না তারপরও আপনি বিপুল ব্যথা বিনা কারনে অসস্থি অনুভব করেন?

হাজারো টেস্ট করে চিকিৎসক যখন ব্যর্থ হয় তখন
বুঝবেন আপনি জাদুগ্রস্ত অথবা জীনের আছরগ্রস্থ !!!!!!!!

মেডিক্যাল সায়েন্স এটা কে বলে মানুসিক রোগ।
ডাক্টাররা দীর্ঘ দিন আপনাকে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ঘুমের টেনশন ফ্রী ওষুধ দিয়ে থাকেন।
অনেক সময় এর কোন ফলাফল আসেনা।
ধরনের সমস্যা হলেই দেরি না করে ভাল ঝাড়ফুক জানা কোন হুজুর অথবা কবিরাজের যাওয়া উচিত।
সংক্রান্ত বিস্তারিত জানতে এখান থেকে ঘুরে আসতে পারেন। ধন্যবাদ সবাইকে
আমাকে কিছুক্ষন সময় দেয়ার জন্য।
ভাল থাকবেন সবাই
শুভ কামনা



 
   
This website was created for free with Own-Free-Website.com. Would you also like to have your own website?
Sign up for free